মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ০৬:১৭ এএম
ভারতের ব্যাঙালুরুর নারায়ণা ইনস্টিটিউট অব কার্ডিয়াক সায়েন্সের প্রতিষ্ঠাতা, খ্যাতিমান হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. দেবী প্রসাদ শেঠী ইউরোপ আমেরিকার তুলনায় ভারত বাংলাদেশের মানুষের হৃদরোগের ঝুঁকি তিনগুণ এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি ২০ গুন বেশি মন্তব্য করে বলেছেন, বংশানুক্রমিকভাবে এই অঞ্চলের মানুষ হৃদরোগের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। তবে চট্টগ্রামে গতকাল থেকে চালু হওয়া ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে স্থাপিত বিশ্বের সর্বাধুনিক একটি সিটি স্ক্যান মেশিনের কথা উল্লেখ করে ডাক্তার দেবী শেঠী বলেন, এই মেশিনের সাহায্যে মাত্র তিন সেকেন্ডেই একজন মানুষের আগামী ২০ বছরের মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার আশংকা আছে কিনা তা বলে দেয়া
সম্ভব। তিনি বলেন, ইউরোপ আমেরিকায় হৃদরোগ হচ্ছে অবসরপ্রাপ্ত মানুষদের রোগ, ৬০-৬৫ বছর বয়সের পরে দেখা দেয়। আর এই অঞ্চলে হৃদরোগ হচ্ছে যুবকদের রোগ, ৪০ এর আগে পরেই হৃদরোগে আক্রান্তের ঘটনা ঘটতে শুরু করে। ইউরোপ আমেরিকায় সন্তানেরা বৃদ্ধ পিতা-মাতাদের হৃদরোগের চিকিৎসা করাতে নিয়ে যায়, আর এই অঞ্চলে বৃদ্ধ পিতা-মাতা সন্তানদের হৃদরোগের চিকিৎসা করাতে হাসপাতালে ছুটেন।
গতকাল শনিবার সকালে নগরীর পাহাড়তলী চক্ষু হাসপাতালের সন্নিকটস্থ ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল উদ্বোধন শেষে তিনি সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে উপরোক্ত মন্তব্য করেন। এ সময় তিনি চট্টগ্রামে কর্মরত প্রিন্ট এবং ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
ডা. দেবী শেঠী বলেন, খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনাচারের মাধ্যমে হৃদরোগের ঝুঁকি কমানো যায়। নিয়মিত হাঁটা এবং ব্যায়াম হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। বাংলাদেশ এবং ভারতের মানুষ ব্যায়াম করতে চান না বলেও তিনি মন্তব্য করেন। ডাক্তার দেবী শেঠী ভাজা পোড়া না খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, তেলে ভাজা খাবার হৃদরোগ ত্বরান্বিত করে। যে কোন ধরনের জাঙ্ক ফুড হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। ধুমপান হৃদরোগকে আমন্ত্রণ জানায়। বাংলাদেশ এবং ভারতে অপেক্ষাকৃত তরুণ বয়সের লোকজন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
পৃথিবীর খ্যাতনামা এই কার্ডিয়াক সার্জন ধর্মীয় অনুশাসন মানুষকে ভালো রাখে মন্তব্য করে বলেন, আপনি যেই ধর্মেরই হোন না কেন, ধার্মিক হোন। সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস রাখুন। আপনাকে আধ্যাত্মিকতা অর্জন করতে হবে না, শুধু ধর্মীয় অনুশাসনগুলো মেনে চলুন। প্রতিদিন কাজ শুরু করার আগে গডকে বলুন। কাজ শেষ করে গডকে ধন্যবাদ দিন। ভেরি সিম্পল। আপনি ভালো থাকবেন।
বাংলাদেশ এবং ভারতে রোগ প্রতিরোধের জন্য চেকআপের সংস্কৃতি গড়ে উঠেনি উল্লেখ করে ডাক্তার দেবী শেঠী বলেন, অসুস্থ না হলে এখানে কেউ ডাক্তারের কাছে যেতে চান না। অথচ সুস্থ অবস্থায় সুস্থ থাকার জন্যই ডাক্তারের কাছে বেশি যাওয়া উচিত। নিয়মিত চেকআপ করানোর মাধ্যমে বহু রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, সিটি স্ক্যান নামের একটি মেশিন আছে। এই মেশিন দিয়ে মাত্র তিন সেকেন্ডে আগামী বিশ বছরের মধ্যে কোন লোকের হার্ট অ্যাটাক হবে কিনা তা বলে দেয়া সম্ভব। এই মেশিনটি ইম্পেরিয়ালেও আছে। আমি দেখলাম এখানে বেশ লেটেস্ট মডেলের সিটি স্ক্যান মেশিন বসানো হয়েছে। সিটি এনজিওগ্রামের মাধ্যমেও হৃদরোগ থেকে আগাম সতর্ক হওয়া যায়। ডাক্তার দেবী শেঠী বলেন, প্রত্যেক সুস্থ মানুষের প্রতি দুই বছরে অন্তত একবার চেকআপ করানো উচিত। ব্লাড প্রেসার এবং ডায়াবেটিসসহ হৃদযন্ত্রের পরীক্ষাগুলো খুবই জরুরি বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, আমি ত্রিশ বছর ধরে হৃদযন্ত্রের চিকিৎসা করছি। একসময় একজন রোগীকে অপারেশনের জন্য রাজি করাতে এক ঘন্টা কাউন্সিলিং করতে হতো। আর এখন মাত্র এক দুই মিনিটের মধ্যেই রোগী অপারেশনের জন্য তৈরি হয়ে যান। অপরদিকে অপারেশন লাগবে না বললে অনেক রোগী উল্টো সংশয়ে পড়ে যান। তাদেরকে কাউন্সিলিং করে বুঝাতে হয়। খাদ্যাভাস এবং জীবনাচারে পরিবর্তন আনতে বলা হয়।
হৃদরোগ চিকিৎসায় কিংবদন্তীর পর্যায়ে যাওয়ার গোপন রহস্য জানতে চাইলে ডাক্তার দেবী শেঠী হেসে উঠেন। তিনি বলেন, বিশেষ কিছু নেই। আমার কাছে কোন রোগী অপারেশনের জন্য আসলে আমি তাঁর পরিবারের সদস্যদের সাথে বৈঠক করি। কথা বলি। তাদের সম্পর্কে জানি। রোগ সম্পর্কে তাদের জানাই। আমি তাদেরকে ঠিক আমার পরিবারের সদস্য হিসেবে বিবেচনা করি। নিজেকে তাদেরই একজন হিসেবে ভাবি। আমার পরিবারের কারো এই সমস্যা হলে যা করতাম ঠিক তাই তাদের জন্য করি। করতে বলি। অত্যন্ত সৎভাবে সত্যটা বলি। সৎ পরামর্শ দিই। এর বাইরে আর তেমন কিছু করি না বলে আবার মৃদু হাসেন ডাক্তার দেবী শেঠী।
নিজের প্রতিষ্ঠিত নারায়ণা হাসপাতালের সাফল্যের কারণ তুলে ধরে তিনি বলেন, নারায়ণা হাসপাতাল গড়ে তোলা হয়েছে গরিব রোগীদের জন্য। তবে সেখানে ধনীদেরও চিকিৎসা দেওয়া হয়। সাধারণত হাসপাতালগুলো প্রতিষ্ঠা করা হয় ধনীদের জন্য। সেখানে গরীবদেরও কিছু চিকিৎসা দেওয়া হয়। হাসপাতালগুলো গরিবদের জন্য গড়ে তুলতে হবে। সেখানে ধনীদেরও চিকিৎসা দেয়া হবে। হাসপাতালে প্রতিজন ডাক্তার নার্স এবং টেকনেসিয়ানকে বুঝাতে হবে যে, তারা গরিবের চিকিৎসার জন্য কাজ করছেন। তাহলেই শত শত হাসপাতালের ভিড়েও সেই হাসপাতালটি অনন্য হয়ে উঠবে।
বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার সাথে ভারতের চিকিৎসা ব্যবস্থার খুব বেশি পার্থক্য নেই উল্লেখ করে ডাক্তার দেবী শেঠী বলেন, তবে ভারতে অনেক হাসপাতাল। অনেক ডাক্তার। রোগীর কাছে বিভিন্ন অপশন থাকে। বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার রোগী এই অপশনের জন্যই ভারতে যান বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
সূত্র দৈনিক আজাদী
বিবিএস নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় বেসরকারী বাণিজ্যিক ব্যাংক প্রাইম ব্যাংক সম্প্রতি শা... বিস্তারিত
নিজস্ব প্রতিবেদন : গ্রীন ডেল্টা ড্রাগন এনহ্যান্সড ব্লু চিপ গ্রোথ ফান্ড (জিডিডি ইবিসিজিএফ) এর ‘ট্... বিস্তারিত
ডেস্ক রিপোর্ট: প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিঃ সম্প্রতি স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিঃ এর সাথে গ্রুপ বীমা... বিস্তারিত
ডেস্ক রিপোর্ট: গতকাল ১৮ই অক্টোবর, ২০২১-এ মাহমুদ টাওয়ার (লেভেল ৮), ১৯, সিদ্দিক বাজার, নর্থ সাউথ রোড, বংশ... বিস্তারিত
ডেস্ক রিপোর্ট: লাইফ বীমা খাতের কোম্পানী মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিঃ গতকাল ১৭অক্টোব... বিস্তারিত
ডেস্ক রিপোর্ট: গত ১৪ই অক্টোবর ২০২১ এ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর জন্ম শতবার্ষিকী উ... বিস্তারিত
বিবিএস নিউজ: বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিকেএসপির খেলোয়াড়দের গ্রুপ ও স্বাস্থ্য বীমা সুবি... বিস্তারিত
বিবিএস নিউজ : ধারাবাহিক বীমা দাবী পরিশোধের অংশ হিসেবে সম্প্রতি পপুলার লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানী... বিস্তারিত
নিজস্ব প্রতিবেদক// পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ননলাইফ বীমা কোম্পানী সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কো... বিস্তারিত